Monday, August 20, 2007

আলাস্কাঃ পঞ্চম দিনে


আলাস্কা নিয়ে আমার ভ্রমন কাহিনীটা আর শেষ হচ্ছে না৷ নানা কারনে লেখা হয়ে ওঠে না, লিখতে ভালোও লাগে না, আবার ওদিকে লিখে রাখতে চাই৷ টাইম ক্যাপসুল৷ যদিও বেশীরভাগ উল্লেখযোগ্য ঘটনা, ডায়ালগ ভিডিওতে তুলে রেখেছি, তাও লিখিত অবস্থায় রাখলে পরে অল্টারনেট সোর্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে৷

পঞ্চম দিনটা বোধহয় সবচেয়ে কম ঘটনা বহুল দিন৷ বেশীরভাগ সময় গেছে ড্রাইভ করতে করতে৷ ফেয়ারবব্যাংক্স থেকে অ্যাংকরেজে আবার ফিরে আসলাম আমরা ওইদিন৷ আগের রাতে অরোরা দেখে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল, ঘুমোতে ঘুমোতে আড়াইটা তিনটা৷ সকালে বেশ বেলা করে উঠলাম৷ ডেনী’স এ পেট পুরে ব্রাঞ্চ (সকাল আর দুপুরের খাওয়া একসাথে) খেয়ে রওনা দিতে দিতে ১১টার বেশী বেজে গেল৷ গোটা রাস্তা ৪২৮ মাইল (প্রায় ৭০০ কিমি)৷ একটানা চালালেও ৮ ঘন্টার বেশী লাগার কথা৷ হাইওয়ে ২ ধরলাম, গন্তব্য ডেল্টা জাংশন৷ ডেল্টা জাংশন থেকে একটা রাস্তা চলে গেছে দক্ষিন পশ্চিমে কানাডার ইউকন টেরিটরির দিকে, আর আরেকটা ভালডেজ/অ্যাংকরেজের দিকে৷ দিনটা বেশ পরিস্কার ছিল৷ সামনে দক্ষিন দিগন্ত বরাবর মাতানুষ্কা-সাস্তিনা পর্বতমালা৷ তিনটি চুড়া মাউন্ট ডেবরা, মাউন্ট হেস, আর মাউন্ট মোফিট বেশ পরিস্কার দেখা যাচ্ছিল৷ এরকম আকাশ থাকলে কে জানে হয়তো মাউন্ট ম্যকিনলীও দেখতে পেতাম৷ ম্যাকিনলী না দেখতে পাওয়াটা বেশ দুঃখজনক ছিল সেবার৷

ডেল্টা জাংশন পর্যন্ত রাস্তায় অনেক গাড়ী৷ কাছেই কোথাও আর্মিদের ক্যাম্প আছে৷ আর বেশ স্বাস্থ্যবান তানানা নদী৷ অনেক জায়গায় থামলাম আমরা৷ আমি ছাড়া সবাই বেশ আপবিট৷ আমি একটু টেনশনে ছিলাম দেরী হয়ে যাচ্ছে কি না৷ ওই দিনের আমার একটা টার্গেট ছিল বিকাল পাচটার আগে Wrangell-St Elias National Park এ পৌছুনো৷ যেভাবে যাত্রা বিরতি হচ্ছিল, ইলিয়াস মিস হতে পারে ভেবে কষ্ট পাচ্ছিলাম৷ দুটোর দিকে বা আরও পরে ডেল্টা জাংশনে পৌছলাম৷ হাইওয়ে-২ কানাডার দিকে গিয়েছে, আমরা নেবো হাইওয়ে-৪৷ রাস্তায় উঠেই বুঝলাম এ রাস্তায় লোকজন তেমন নেই৷ অথবা একদমই নেই৷ কোন লোকালয় বা জনবসতিও নেই৷ সাস্তিনা পর্বতমালা পার হয়ে গেলাম এক সময়৷ দুপাশে প্রাকৃতিক দৃশ্য বলতে হয় মারাত্মক৷ পুরো ট্যুরের সবচেয়ে ভালো ছবিগুলোর কয়েকটা তুলেছি এখানে৷ মেয়েদের অনেকের বাথরুম চেপে বসলো এর মধ্যে৷ কোন বসতি নিদেনপক্ষে কোন গ্যাসস্টেশনও নেই৷ অনেকক্ষন পর একটা ট্রেলারের মধ্যে দোকানের দেখা পাওয়া গেল৷ এই বিরান এলাকায় এই লোক থাকে কিভাবে কে জানে৷ কোন ইলেক্ট্রিসিটি কানেকশনও নেই৷ নিজেরা জেনারেটর দিয়ে যতটুকু পারে৷
দিগন্তে আস্তে আস্তে Wrangell-St Elias এর দেখা পাওয়া গেল৷ বেশ কয়েকটা উচু চুড়া আছে এখানে৷ মাউন্ট Wrangell নিজে ১৪,১৬৩ ফিট, মাউন্ট স্যানফোর্ড ১৬,২৩৭ ফিট আর মাউন্ট ব্ল্যাকবার্ন ১৬,৩৯০ ফিট৷ মেঘের জন্য একটু কষ্ট হচ্ছিল দেখতে৷ ঘড়িতে পাচটা এর মধ্যে বেজে গেছে৷ তাও একটা ক্ষীন আশা ছিল হয়তো ট্যুরিস্ট সিজন বলে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে৷ ফাকা রাস্তা পেয়ে বেশ দ্রুত চালিয়ে নিলাম ভ্যানটা৷ ম্যাপে দেখাচ্ছে পরবর্তি শহর গুলকানা, গুলকানা নদীর ধারে৷ অনেকক্ষন গিয়ে শুধু একজায়গায় একটা গ্যাসস্টেশন আর একটা ছোট দোকান দেখলাম৷ এইটুকুই মনে হয় গুলকানা৷ একশ মাইলের মধ্যে এতটুকুই জনবসতি আছে মনে হয়৷

পার্কের ভিজিটর সেন্টারে যখন পৌছলাম সাতটা বেজে গেছে তখন৷ নাহ, পার্ক ৫ টাতেই বন্ধ হয়ে গেছে৷ এখানে একটা ন্যাচার ট্রেইল ছিল যেটা অনেকে রেকমেন্ড করেছে, সেটাও মিস৷ একটু হা হুতাশ করলাম৷ এই দুঘন্টা বাচানো যেত৷ আরো মিস হলো কপার রিভার৷ কপার নদীর স্যামন খুব বিখ্যাত৷ আমাদের ওখানে বেশ দাম দিয়ে কিনতে হয়৷ কি আর করা, একটু উল্টো দিকে গিয়ে অ্যাংকরেজের পথ ধরলাম৷ রাস্তার এ অংশের নাম গ্লেন হাইওয়ে৷ জনবসতি বিহীন রাস্তা, পথে একটা এয়ারপোর্ট দেখলাম শুধু, তাজলিনা এয়ারপোর্ট৷ দশটার দিকে সুর্যটা আস্তে আস্তে ডুবে যেতে লাগলো৷ টুকটাক ছবি তুললাম৷ যাত্রীরা সবাই ক্লান্ত, বিরক্তও কিছুটা৷

শীপ (ভেড়া) পর্বত পার হওয়ার পর আজকে দিনে আমার শেষ দর্শনীয় স্থান৷ অনেক দেরী হয়ে গেছে অবশ্য৷ মাতানুষ্কা গ্লেসিয়ার৷ একদম রাস্তার পাশেই৷ বেশ বড়, আর হাইওয়ে থেকে শরীরের অনেকটাই দেখা যাচ্ছিল৷ গ্লেসিয়ার পার্কে এসে থামলাম, ততক্ষনে একটু অন্ধকার হয়ে গেছে৷ হেটে গিয়ে গ্লেসিয়ারে ওঠা যায়, মাইল খানেক হাটতে হবে৷ গ্রিজলী ভালুকের দেশ৷ বাঙালী মন ঠিক সায় দিল না৷ আবার যেতেও মন চায়, দিনে এমনিতেই দিনভর অনেক ব্যর্থতা আছে৷ শেষমেশ গাড়ী নিয়ে যতদুর যাওয়া যায় গেলাম, কাচা রাস্তা, শেষমাথায় এসে আর উপায় নেই৷ বাকীটুকু হেটে যেতে হবে৷ আমি ছাড়া কেউই হাইকিং এ রাজী না৷ এমনকিও আমিও ভেতরে ভেতরে ভয় পাচ্ছি৷ ফিরেই এলাম৷ ড্রাইভার বদলালাম এক পর্যায়ে, এখনো অনেক রাস্তা বাকী, কিন্তু অন্ধকার হয়ে যাওয়ার আর কিছু দেখা যাচ্ছে না৷

মধ্যে একটা শহর ছিল, পামার, বড় আকারের মেলা হয় এখানে৷ বিশাল সাইজের মিষ্টি কুমড়া, আর ফুলকপি নিয়ে আসে লোকে৷ সময় নেই তাই দাড়ালাম না৷ মাঝরাতে গিয়ে অ্যাংকরেজ পৌছলাম৷ ভালো হোটেল নিয়েছি এবার, সুতরাং চিন্তা নেই৷

Sunday, August 19, 2007

বই পড়লামঃ The God Delusion/Richard Dawkins

গত দু সপ্তাহে পড়ে শেষ করলাম ডকিন্সের গড ডিল্যুশন, মারাত্মক লাগলো৷ এ বছরে পড়া বইগুলোর মধ্যে সেরা নিঃসন্দেহে৷ নিয়মিত ব্লগালে অন্তত ২০টা পোস্ট লেখা যেতে পারে স্রেফ এই বইটার বক্তব্য আর আমার ধারনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে৷ ডকিন্স আর কুর্যওয়াইল মনে হয় দুজন লেখক যাদের লেখায় গত ৫ বছরে সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত হয়েছি৷ কিছুদিন আগে বিল ওরাইলি শো’তে ডকিন্সকে দেখলাম এই বইটা নিয়ে বিলের সাথে কথা বলছে৷ বিল ওরাইলি যুক্তরাষ্ট্রে বেশ জনপ্রিয় ডানপন্থি টক শো হোস্ট৷ ওরাইলি সবচেয়ে জনপ্রিয় টক শো হোস্টও হতে পারে, নানারকম গরম গরম কথা বলার জন্য৷ ওইদিন অবশ্য ওরাইলি ডকিন্সের সাথে তুলনামুলকভাবে ভালো ব্যবহার করলো দেখলাম৷ আসলে ডকিন্সের লেখা সিরিয়াসলি না নিয়ে উপায় নেই৷ ভুয়া নাস্তিকদের সাথে ডকিন্সের অনেক পার্থক্য আছে৷ তো সে যাই হোক দেখি ডকিন্সের লেখা কতটুকু তুলে আনা যায় এখানে৷ তবে হাতে সময় থাকলে বইটা পড়ে নেয়াটা খুবই জরুরী৷

Thursday, July 12, 2007

বিপ্লবী থেকে রাষ্ট্রনায়ক

রবার্ট মুগাবের দেশ জিম্বাবুয়ে নিয়ে প্রতিবেদন দেখছিলাম৷ হালে জিম্বাবুয়ের অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছে৷ বিশেষ করে অর্থনৈতিক অবস্থার৷ কয়েক দশক আগের প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপুর্ণ সম্ভাবনাময় আফ্রিকান দেশ জিম্বাবুয়ে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে৷ মুগাবে বৃটিশদের খেদিয়ে রোডেশিয়া থেকে জিম্বাবুয়ে স্বাধীন করেন৷ তখনকার ভুমিকার জন্য মুগাবে মুক্তিকামী জনতার নেতা হিসেবে পুরো বিশ্বে নন্দিত ছিলেন৷ সেই মুগাবে এখন তিন দশক পরেও জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায়৷ বিরোধিরা মুগাবের কঠোর দমন নীতির পর এখন জান নিয়ে পালাতেই ব্যস্ত৷ দেশের মানুষও পালাচ্ছে যে যেভাবে পারে৷

অনেকসময় মনে হয় বঙ্গবন্ধু বেচে থাকলেও কি এরকম ফলাফল হতো৷ ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট না হলে বঙ্গবন্ধু কি এখনও বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকতেন? তিন বছরেই জাতির জনক থেকে তার আচার আচরন অনেকটাই স্বৈরাচারদের মতো হয়ে উঠছিল, বিশেষ করে বাকশাল গঠন, পত্র পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া৷ ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন এরকম অনেককে চিনি, তাদের ভাষায় বঙ্গবন্ধুর মতো উদার মনের রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশে কম এসেছে৷ কিন্তু বাকশালটাও তো সত্যি৷ আর বঙ্গবন্ধু যে প্রশাসক হিসেবে ভীষনভাবে ব্যর্থ সন্দেহ নেই৷ কে জানে আমরা একজন মুগারের হাত থেকে বেচে গেছি কি না৷

মোটরসাইকেল ডায়েরী সিনেমাটা দেখে তরুন চে’গুয়েভারাকে ভালো না লাগার কারন নেই৷ তরুন ফিদেল ক্যাস্ট্রোকেও হয়তো তাই লাগবে৷ কিন্তু চারদশক ধরে ক্ষমতা আকড়ে ধরে থাকা, লৌহমানব ফিদেলের দেশের এত দুরবস্থা কেন৷ মায়ামী, ফ্লোরিডাতে গিয়েছিলাম ঘুরতে, পথে ঘাটে কিউবা থেকে পালিয়ে আসা লোকজন৷ হায়রে চে, আর ফিদেল, এই ছিল তাদের স্বপ্ন৷

জর্জ ওয়াশিংটন, বা জেফারসন একটু ভিন্ন ধরনের৷ তারা মুগাবে, শেখমুজিব বা চে’র মতো অতটা ক্যারিসমাটিক নন৷ কিন্তু আড়াইশ বছর আগে জর্জ ওয়াশিংটন যেটা করেছিলেন আমাদের বঙ্গবন্ধু বলতেই হয় ততটা পারতেন না, পারেন নি৷ জর্জ ওয়াশিংটনের সুযোগ ছিল বৃটিশদের হারিয়ে নিজেকে রাজা ঘোষনা করার৷ জেফারসনও হয়তো করতে পারতেন৷ আধুনিক গনতন্ত্র তখনও অপ্রচলিত৷ তা না করে তারা নিশ্চিত করলেন তাদের সদ্য স্বাধীনকৃত দেশে সবার অধিকার, কথা বলার স্বাধীনতা হবে সর্বোচ্চ৷ তাদের দেশ আজকের মহা পরাক্রমশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷

ঈশ্বরের নিরাপত্তার অভাব

ওইদিন একজায়গায় পড়ছিলাম তালেবান আমলে কিভাবে হাজার বছরের পুরোনো বৌদ্ধ মুর্তিগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল আফগানিস্থানে (বামিয়ান ২০০১)৷ বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও মোল্লাদের সে নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না৷ তবে ব্রোঞ্জের বিশালাকার মুর্তিগুলোর উপর আক্রমন এই প্রথম নয়৷ মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবও তার আমলে ওগুলোর ক্ষয়ক্ষতি করেছেন৷ সম্ভবত তার আমলেই মুর্তি থেকে হাত কেটে নেয়া হয়৷ মুসলিমরা ছাড়াও মুর্তি ধ্বংস, স্থাপত্য কীর্তি ধ্বংস এগুলো ঐতিহাসিকভাবে আরো অনেকে করেছে৷

বেশীরভাগ ধর্মের ঈশ্বর অন্য ধর্মের ঈশ্বরের ধর্মের মুর্তি বা অন্য কোন সিম্বল সহ্য করতে পারেন না৷ তারা তাদের প্রেরিত গ্রন্থে একথাটা বারবার ভালো করে মনে করিয়ে দিয়েছেন (I, the Lord your God, am a jealous god)৷ পৌত্তলিক মুর্তি ভাঙ্গাটা একরকম পবিত্র দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ আমার শুধু খটকা লাগে মহা পরাক্রমশালী ঈশ্বর ঠুনকো কাদামাটির/পিতলের মুর্তিকে এত ভয় পান কেন৷ এটা কি তার ট্যাবু? উত্তম তো অধমের সাথে নিশ্চিন্তে চলে, তাহলে কি ঈশ্বর কোনভাবে মধ্যম যে ওনাকে তফাত রাখতে হচ্ছে৷ নাকি insecurityর কারন ঈশ্বরের শৈশবকালিন কোন ঘটনা৷ কখনো কি উনি অন্য ঈশ্বরদের হাতে নিগৃহিত হয়েছিলেন৷ আবার হওয়ার ভয় পাচ্ছেন৷ দ্বিতীয় স্বামীর মতো প্রথম স্বামীর সব চিহ্ন মুছে ফেলতে চান৷ ঈশ্বর বোধহয় একটু ভীতু টাইপের৷ এত ক্ষমতা থাকতেও এত ভয়৷

ঈশ্বর লোকটা আসলে মজার৷ মাঝে মাঝে মনে হয় লোকটা হয়তো কমেডিয়ান ছিল প্রথম জীবনে৷

জিনোগ্রাফিক প্রজেক্ট

নানা রকম উদ্দ্যেশ্য ডিএনএ এনালাইসিস করা যেতে পারে৷ এখন যেমন এখানে পুলিশি তদন্তে ডিএনএ এভিডেন্স বহুল ব্যবহৃত হয়৷ আবার অনেকে সন্তানের প্যাটার্নিটি টেস্ট করে (আসল বাবা কে বের করার জন্য)৷ তবে আমি টেস্ট করিয়েছিলাম আমার অরিজিন জানার জন্য৷ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক আর IBM মিলে একটা প্রজেক্ট করছে ওদের মাধ্যমে, জিনোগ্রাফিক প্রজেক্ট৷ একশ ডলারের মত লাগে৷ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা এগুলো করে থাকে, কিন্ত ন্যাটজিও কে আমার কাছে নির্ভরযোগ্য মনে হয়েছে৷ এছাড়া এই প্রজেক্টের কর্ণধার স্পেন্সার ওয়েলসের বই পড়েছি, ডকুমেন্টারী দেখেছি, আমাদের এখানে উনি যখন এসেছিলেন তখন ওনার লেকচার সামনাসামনি শোনার সুযোগও হয়েছিল৷ ওখানেই উনি বলছিলেন জিনোগ্রাফিক প্রজেক্ট নিয়ে, এবং এ নিয়ে ওনারা কি কি কাজ করছেন৷ বাংলাদেশ থেকেও টেস্ট কিট অর্ডার দেয়া যেতে পারে৷ তবে পোস্ট অফিস যদি মেরে না দেয়৷

টেস্ট করার জন্য গালের ভেতর থেকে কিছু কোষ দিতে হবে৷ মোটামুটি কয়েক সপ্তাহ লাগে ফলাফলের জন্য৷ টেস্ট দুরকম হতে পারে৷ Mitochondrial DNA অথবা Y-chromosome৷ মাইটোকন্ড্রিয়া আমরা আমাদের মায়ের কাছ থেকে পাই৷ সুতরাং এই টেস্ট মায়ের মায়ের মায়ের … মায়ের ইতিহাস বের করতে সাহায্য করবে৷ অন্য দিকে ওয়াই ক্রোমোজোম শুধু বাবার কাছে থেকে আসে৷ এজন্য এই টেস্ট হচ্ছে বাবার বাবার বাবার … বাবার ইতিহাস বের করবে৷ ছেলেরা দুরকম টেস্টই করতে পারে৷ কিন্তু মেয়েদের কাছে ওয়াই ক্রোমোজোম না থাকায় শুধু মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ টেস্ট করা সম্ভব৷

আমার টেস্টের যে ফলাফল এখানে বলেছি, ওটা আমার ওয়াই ক্রোমোজোম ডিএনএর৷ মানে আমার পিতৃপুরুষ বরাবর৷ এর মানে এই না যে আমার পিতৃপুরুষদের সবাই M130৷ যেমন আমার দাদীর বাবা হয়তো M20৷ আবার আমার দাদার নানা হয়তো M69৷ মানে আমার মধ্যে আসলে অসংখ্য লোকের জিন আছে বা থাকতে পারে৷ সমস্যা হচ্ছে এরা সবাই আমার পূর্বপুরুষ হলেও এদের উপস্থিতি প্রমান করাটা বেশ জটিল৷ এসব টেকনোলজী যতদিন না সহজলভ্য হচ্ছে ততদিন অপেক্ষা করতে হবে৷ সুতরাং আমার পূর্বপুরুষদের বলা যায় একটা অংশ (হয়তো সামান্য অংশ) M130৷ আমি যদি আমার দাদার দাদার … দাদা বরাবর যেতে থাকি এবং এভাবে ৬০ হাজার বছর পিছনে চলে যাই তাহলে যে লোকটিকে পাবো সে নিশ্চিতভাবেই একজন M130৷ এতটুকুই প্রমান পেয়েছি৷ M130 নিয়ে আরো আলোচনা পরে আসছে৷
 
eXTReMe Tracker